গাছ না থাকলেও আমরা নিঃশ্বাস নেই কিভাবে?—অক্সিজেনের অদৃশ্য কারখানা
গাছ না থাকলেও আমরা নিঃশ্বাস নেই কিভাবে?—অক্সিজেনের অদৃশ্য কারখানা
মানবজাতিসহ সকল প্রাণীর জীবিত থাকার জন্য অক্সিজেন অত্যাবশ্যক। আমরা জানি, পৃথিবীর অক্সিজেন মূলত আসে গাছপালা এবং সাগরে বাস করা শৈবাল ও প্ল্যাংকটন থেকে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ মনে করে কেবল গাছপালা থেকেই অক্সিজেন আসে, যা পুরোপুরি সত্য নয়।
✅ অক্সিজেনের প্রধান উৎসসমূহ:
- সমুদ্রের ফাইটোপ্ল্যাংকটন (Phytoplankton): পৃথিবীর প্রায় ৫০%–৮০% অক্সিজেন উৎপন্ন হয় এই ক্ষুদ্র সামুদ্রিক শৈবাল থেকে। তারা সূর্যালোক, জল এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ফটোসিনথেসিসের মাধ্যমে অক্সিজেন তৈরি করে।
🔗 Source: NASA Earth Observatory - স্থলভাগের গাছপালা ও অরণ্য: বনজ গাছপালা, বিশেষ করে আমাজনের মতো বৃষ্টি-অরণ্য, পৃথিবীর একটি বড় অংশ অক্সিজেন তৈরি করে।
- অ্যালজি (Algae): সমুদ্র, হ্রদ বা জলাশয়ে থাকা অ্যালজি-ও গুরুত্বপূর্ণ ফটোসিনথেটিক জীব, যা প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন নির্গত করে।
🌬️ বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের সরবরাহ প্রক্রিয়া:
অক্সিজেন উৎপাদনের পর তা পরিবেশে মিশে যায় এবং বায়ুমণ্ডলের অংশ হয়ে থাকে। বাতাসে প্রায় ২১% অক্সিজেন থাকে, যা প্রাণীরা শ্বাস নিয়ে ব্যবহার করে। প্রকৃতির চক্রে মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী পচে গেলে কিছু অক্সিজেন পুনরায় কার্বন ডাই-অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। এই চক্রে ব্যালেন্স বজায় থাকে।
❓ গাছপালা-শূন্য দেশগুলো কিভাবে টিকে থাকে?
যেসব দেশে বনভূমি কম, তারা আন্তর্জাতিকভাবে সমুদ্র ও বৈশ্বিক বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন পায়। কারণ বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলো স্থির নয়, বরং বিশ্বজুড়ে প্রবাহমান। ফলে একটি দেশের বন না থাকলেও অন্য দেশের বন, সাগর, প্ল্যাংকটন বা অ্যালজি তাদের অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।
তবে এটা মনে রাখা জরুরি, গ্লোবাল অক্সিজেন সরবরাহ একটি যৌথ ভারসাম্যের উপর নির্ভরশীল। যদি সারা পৃথিবীতে গাছপালা ও সামুদ্রিক জীবের পরিমাণ একসঙ্গে কমে যায়, তখন প্রকৃতিই তার ভারসাম্য হারাবে।
Comments
Post a Comment